মকবুল হোসেন: নরসিংদীর কাঠালিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের অর্ধ শতাধিক ফলজ গাছ কর্তন সহ বাড়ির চারপাশে বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে দীর্ঘ পাঁচদিন ধরে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ফজর আলী গং নামে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ট্রিপল নাইনে কল করেও কোন পুলিশি সহায়তা মিলেনি বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার। ফলে গৃহবন্দি অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা ।
শুক্রবার বিকেলে নরসিংদী সদর উপজেলার কাঠালিয়া ইউনিয়নের চৌঘরিয়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সামসুল হক ও আমির হোসেন পরিবারের বাড়িঘরের চারপাশে বাঁশের খুঁটি দিয়ে শক্ত বেড়া নির্মাণ করে তাদেরকে বাড়ির ভেতরে বন্দি করে রেখেছে ফজর আলী গংদের লোকজন।
এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেই ফজর আলী গং দের লোকজন হট্টগোল বাঁধিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মারতে তেড়ে আসে।
ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী জানান, বিগত ১৯৮৫ সালে আমির হোসেন ও সামসুল হক গং জমি ক্রয় করে তাদের নিজ জমিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। কিছুদিন পূর্বে হঠাৎ করে ফজর আলী গং এর লোকজন এ জমি তাদের বলে দাবি করে। পরে এ নিয়ে এলাকায় কয়েকটি সালিশ বৈঠক হয় কিন্তু তারা কাঠালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সহ কারো সিদ্ধান্তই মানেনি।
গত পাঁচদিন পুর্বে মনরুদ্দিনের ছেলে মালেক, আইয়ুব,খালেক, মৃত ফজর আলীর ছেলে শওকত, রুপচান, সাব্বির, শাহ্ আলম, জাকির,মেয়ে রুজিনা, কেরামত আলীর ছেলে আলেখ, ইসমাঈলের ছেলে ফারুক, রুপচান এর ছেলে মুছা, ইউসুফ ও শাহ্ আলম এর স্ত্রী খাদিজা বহিরাগত ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে অর্ধ শতাধিক ফলজ গাছ কেটে ফেলে এবং আমাদের ঝাড়ের বাঁশ কেটে বাড়ির চারপাশে বেড়া দিয়ে আমাদের বন্দি করে রাখে। পরে উপায়ান্তর না পেয়ে তারা ট্রিপল নাইনে কল করে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য অলিউল্লাকে বিষয়টি অবগত করে।
বিগত পাঁচদিন ধরে তারা বন্দি দশায় নিজ বাড়িতে স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করলেও কোন ধরনের পুলিশের সহায়তায় পায়নি বলে জানান তারা।
এদিকে জবরদখলকারীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন এ নিয়ে চারবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি সালিশ বৈঠকে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ হাজির হয়নি তাই তারা এখন যা করেছে তা সঠিক করেছে। তাছাড়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) বীনা আক্তার ও ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য অলিউল্লাহ সহ সালিশ বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই তাদেরকে তাদের নিজ জমি দখল করে নেওয়ার রায় দিয়েছিলেন তাই তারা এ কাজ করেছে বলে জানান।
তবে সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীনা আক্তার তার উপর আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বলেন, ইতোপূর্বে ও তারা কারো কথার তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক জমিতে বেড়া দেয়া । পরে বীনা আক্তার স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সেই বেড়া অপসারণ করেন। তারা এলাকার কাউকেই মানে না বলে ও জানান তিনি।
এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবাদুল্লাহ এর কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এবিষয়ে অবগত নন বলে জানান।
এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সহ সন্ত্রাসী শাহ আলম গংদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন ভুক্তভোগী পরিবার।